সিলডেনাফিল একটি ওষুধ যা পুরুষের ধ্বজভঙ্গ (ইরেক্টাইল ডিসফাংশন) চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এটি একটি PDE5 ইনহিবিটার যা রক্তনালীগুলোকে শিথিল করে এবং লিঙ্গে রক্ত প্রবাহ বাড়ায়। এর ফলে লিঙ্গোত্থান ঘটে। ইরেক্টাইল ডিসফাংশন (ইডি) হল যৌনমিলনের জন্য পর্যাপ্ত শক্ত বা দীর্ঘস্থায়ী লিঙ্গোত্থান অর্জন বা বজায় রাখার অক্ষমতা। এটি একটি সাধারণ যৌন সমস্যা যা প্রায় 40% পুরুষদের জীবনে একবার বা
একাধিকবার প্রভাবিত করতে পারে। ইডির অনেক কারণ রয়েছে। শারীরিক কারণ এর মধ্যে রয়েছে কার্ডিওভাসকুলার রোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, মূত্রাশয়ের সমস্যা, স্নায়বিক সমস্যা, অস্ত্রোপচার, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ইত্যাদি। মানসিক কারণের মধ্যে রয়েছে উদ্বেগ, বিষণ্ণতা, মানসিক চাপ, সম্পর্কগত সমস্যা ইত্যাদি।
ইডির চিকিৎসার জন্য অনেকগুলো উপায় রয়েছে। ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা ইরেক্টাইল ডিসফাংশনের সবচেয়ে সাধারণ চিকিৎসা। এই ওষুধগুলো লিঙ্গের রক্তনালী গুলোকে প্রসারিত করে এবং রক্ত প্রবাহকে বাড়িয়ে দেয় যা লিঙ্গোত্থানকে সাহায্য করে থাকে। ইনজেকশনের মাধ্যমেও এর চিকিৎসা করা যায়।
ইনজেকশন সরাসরি লিঙ্গের মধ্যে প্রবেশ করানো হয়। বীমের মাধ্যমে চিকিৎসা করা যেতে পারে। এগুলো লিঙ্গের মধ্যে স্থাপন করা হয় এবং লিঙ্গোত্থানকে স্থিতিশীল করতে সাহায্য করে এগুলো। সার্জারি বিরল ক্ষেত্রে প্রয়োজন হতে পারে যখন অন্যান্য চিকিৎসা গুলো কাজে আসে না।
ইডি একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে উঠতে পারে যা পুরুষদের যৌন জীবন এবং আত্মসম্মানকে প্রভাবিত করতে পারে। তবে ইডির অনেকগুলো কার্যকর চিকিৎসা রয়েছে যা পুরুষদের আবারও যৌনমিলনে অংশগ্রহণ করতে এবং উপভোগ করতে সাহায্য করতে পারে। ইডি প্রতিরোধের জন্য কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে।
যেমন স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা, নিয়মিত ব্যায়াম করা, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, ধুমপান এবং মদ্যপান এড়িয়ে চলা এবং মানসিক চাপ কমানো। যদি আপনার ইডির লক্ষণ থাকে তবে একজন ডাক্তারের সাথে কথা বলে নেয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডাক্তার আপনার ইডির কারণ নির্ণয় করতে এবং আপনার জন্য সঠিক চিকিৎসা দিয়ে সমস্যার সমাধান করতে পারেন।
সিলডেনাফিল ভায়াগ্রা নামেও পরিচিত। ভায়াগ্রা ছাড়াও সিলডেনাফিল অন্যান্য বাণিজ্যিক নামেও বিক্রি হয়। যেমন সিলডেনাফিল সাইট্রেট, সিলডেনাফিল হাইড্রোক্লোরাইড, সিলডেনাফিল অক্সাইড ইত্যাদি। সিলডেনাফিল সাধারণত যৌন মিলনের অন্তত 30 মিনিট আগে সেবন করতে হয়।
এর প্রভাব সাধারণত 4 থেকে 6 ঘন্টা স্থায়ী হয়। সিলডেনাফিল সেবনের আগে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলে নেয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যদি আপনার হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, নিম্ন রক্তচাপ, মাথাব্যথা, স্তন ক্যান্সার, লিভার বা কিডনি সমস্যা, অ্যালার্জি ইত্যাদি থেকে থাকে।
সিলডেনাফিল এর কিছু সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। যেমন মাথাব্যথা, মুখ লাল হয়ে যাওয়া, পেট ব্যথা, দৃষ্টি সমস্যা, ঘুমঘুম ভাব, অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি। সিলডেনাফিল গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও সৃষ্টি করতে পারে।
হৃদরোগের লক্ষণ, যেমন বুকে ব্যথা বা শ্বাসকষ্ট, নিম্ন রক্তচাপের লক্ষণ, যেমন মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, দীর্ঘস্থায়ী লিঙ্গোত্থান (priapism), যা 4 ঘন্টা বা তার বেশি স্থায়ী হয় এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
বাংলাদেশে সিলডেনাফিল ওষুধের দাম নির্ভর করে এর পাওয়ার, ডোজ এবং ব্র্যান্ডের উপর। সাধারণত ৫০ মিলিগ্রাম সিলডেনাফিল ট্যাবলেটের দাম ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা। ২০ মিলিগ্রাম সিলডেনাফিল ট্যাবলেটের দাম ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। সিলডেনাফিল সাসপেনশনের দাম ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা। কিছু জনপ্রিয় সিলডেনাফিল ওষুধের দাম দেওয়া হল:
ভায়াগ্রা ৫০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট: ৩০০ টাকা
সিলডেনাফিল সাইট্রেট ৫০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট: ৩৫০ টাকা
সিলডেনাফিল ২০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট: ২৫০ টাকা
সিলডেনাফিল সাসপেনশন: ৫০০ টাকা
সিলডেনাফিল ওষুধগুলো শুধুমাত্র প্রেসক্রিপশনের মাধ্যমে পাওয়া যায়। তাই এই ওষুধগুলো কিনতে হলে আপনাকে অবশ্যই একজন ডাক্তারের কাছ থেকে প্রেসক্রিপশন নিতে হবে। তারপরে আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এই ওষুধটি সেবন করতে পারবেন।
তাহলে বন্ধুরা আজকের এই আর্টিকেলটি থেকে আপনারা জেনে নিতে পারলেন বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে সিলডেনাফিল ওষুধ এর দাম কত। আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক উপকারে এসেছে এবং আপনারা আপনাদের কাঙ্খিত তথ্যটি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। পরবর্তী আর্টিকেল পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।