কোরআন হাদিসের আলোকে সালামের ফজিলত

একজন মুসলমানের জন্য সালাম আদান-প্রদান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। হজরত আদমকে (আ.) সৃষ্টি করার পর আল্লাহ তাআলা তাকে ফেরেশতাদের সালাম দেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি সালাম দিলে ফেরেশতারাও এর উত্তর দেন। ঠিক এভাবে সালামের আদান-প্রদান শুরু হয়েছিল।কোনো মুসলমান ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে কথা বলার আগে সালাম দেওয়া নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ। আর একজন মুসলমান হিসেবে অবশ্যই আমাদের নবীর আদর্শ মেনে চলা দরকার। তাছাড়া সালামের ফজিলত অনেক বেশি।

তাই আমাদের মধ্যে অনেক মুসলিম ভাই ও বোনেরা কুরআন ও হাদিসের আলোকে সালামের ফজিলত সম্পর্কে জেনে রাখতে আগ্রহী। তাছাড়া একজন মুসলমান ব্যক্তি হিসেবে অবশ্যই আমাদের সালামের ফজিলত সম্পর্কে জেনে থাকা দরকার। তাই আপনাদের জন্য আমরা আমাদের আজকের আটিকেলটির মাধ্যমে জানিয়ে দেব হাদিস ও কুরআনের আলোকে সালামের ফজিলত সম্পর্কে। আপনারা যারা সালামের ফজিলত সম্পর্কে জানতে চান আমাদের আজকের আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শুরু করে শেষ অবধি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর জেনে নিন সালামের ফজিলত সম্পর্কে।

সালামের মাধ্যমে সমাজে ছড়িয়ে পড়ে শান্তি-সম্প্রীতির আলো। সর্বোপরী ইসলামের রীতি মোতাবেক পারস্পরিক যে সালাম বিনিময় হয় একে উপরে শান্তি বিনিময় হয়। তাই সালাম হচ্ছে একে অপরের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তা কামনায় বিশেষ দুআ। যাতে রয়েছে আল্লাহ তা’আলার নিকট অবারিত শান্তি, অফুরন্ত রহমত ও বরকত লাভের অনন্য আবেদন। তাই আমরা একে অপরের প্রতি শান্তি বর্ষণ করার জন্য প্রতিনিয়ত ছোট থেকে বড় সব ধরনের মুসলমান ব্যক্তিকে সালাম দিতে পারি। অনেকে মনে করেন যারা ছোট তাদেরকে সালাম দেওয়া যাবে না। কিন্তু সালাম বয়স ভেদা ভেদ এগুলো মানে না সব বয়সের মানুষকে সালাম দেওয়া দরকার।

রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর উম্মত হিসেবে আমাদেরকে সালামের শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। তাই তারই পরিপ্রেক্ষিতে রাসুলে কারীম (সা.) কে সম্বোধন করে উম্মতকে এ শিক্ষা দেয়া হয়েছে, যখন এক মুসলমান অপর মুসলমানের সাথে সাক্ষাৎ করবে তখন উভয়েই বন্ধুত্ব ও আনন্দাবেগ প্রকাশ করবে একে অন্যের জন্য শান্তি ও রহমত কামনার জন্য সালাম আদান-প্রদান প্রদান করবে। অনেকে সালাম নেয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকেন তবে অনেকেই তা সালাম দিতে অভ্যস্ত নন। তারা বয়সে বা মর্যাদায় ছোটদের সালাম করাকে মর্যাদাহানি বলে মনে করে। কিন্তু এ বিষয়টি সম্পূর্ণ একটি ভুল ধারণা।

সালাম সম্পর্কে অনেক হাদিসে অনেক ধরনের কথা বলা হয়েছে। এক হাদীসে সালাম সম্পর্কে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে।একজন মুসলমান ব্যক্তি হিসেবে ওই ব্যক্তি সর্বাপেক্ষা কৃপণ যে ব্যক্তি যে সালাম দেয়ার মধ্যে কার্পণ্য করে। আরো একটি হাদিসে সালাম সম্পর্কে বলা হয়েছে রাসুলে কারীম (সা.) ছোট-বড় সবাইকে আগে আগেই সালাম দিতেন। এমনকি নিজের কন্যা হযরত ফাতেমা (রা) কেও তিনি আগে সালাম দিতেন। আর তাই তাদের উম্মতদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন নিজ ঘরে প্রবেশের সময় সালাম দেওয়ার প্রতি তাগিদ দিতে হবে। এতে পরিবারের পরস্পরের সম্পর্ক আরো গাঢ় হয়।

সালাম দিতে স্বয়ং আল্লাহ তাআলা আমাদের শিখিয়েছেন। রাসুল (সা.)-কে মিরাজের রাতে তিনি সালাম দিয়েছেন।তাহলে এখান থেকে বোঝা যায় সালামের ফজিলত একজন মুসলমানের জন্য কতটুকু। সালামের মাধ্যমে পরস্পর সহমর্মিতা, ভালোবাসা সৃষ্টি হয়। সালাম দেওয়া সুন্নত আর সালামের জবাব দেওয়া ওয়াজিব। ইসলামে সালামে ফজিলত অপরিসীম। সালামের মাধ্যমে যেমন পরস্পরের মাঝে ভ্রাতৃত্ববোধ ও ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়। তেমনি আল্লাহর নৈকট্য লাভ ও সওয়াব লাভ করা যায়। তাই আমাদের প্রতিটি মুসলমান ব্যক্তির উচিত প্রতিনিয়ত একজন মুসলমান আরেকজন মুসলমানের মধ্যে সালাম আদান প্রদান প্রদান করা।

আমাদের আজকের আলোচনা থেকে আপনারা জেনে নিতে পারবেন কুরআন ও হাদিসের আলোকে সালামের ফজিলত সম্পর্কে। আপনি মহান আল্লাহতালার উদ্দেশ্যে যে ইবাদত করেন না কেন সেই ইবাদতেরই রয়েছে অনেক ফজিলত ও বরকত। আর অধিক পরিমাণে সওয়াব পেতে হলে আমাদের প্রতিনিয়ত একে অন্যকে সালাম প্রদান করতে হবে। তবে আপনারা যারা সালামের ফজিলত সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন। তাদের জন্য আমরা কুরআন হাদিসের আলোকে সালামের ফজিলত সম্পর্কে জানিয়ে দিলাম।

Updated: December 20, 2023 — 2:53 pm

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *